অনলাইন ডেস্কঃ
ঘরোয়া স্বাস্থ্যবিধি বলতে ঐসব স্বাস্থ্যঅনুশীলনকে বোঝায় যেগুলো ঘর এবং দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গগুলি যেমন, সামাজিক ক্ষেত্র, গণপরিবহন, কর্মক্ষেত্র, পাবলিক প্লেস প্রভৃতিতে রোগ সংক্রমণ কমায় কিংবা প্রতিরোধ করে।
এই সকল ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগের বিস্তার প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধির ভূমিকা অপরিসীম।ঘরের বিভিন্ন বিষয়াদি যেমন হাতের স্বাস্থ্যবিধি, খাদ্য ও পানীয়ের স্বাস্থ্যবিধি, ঘরের স্বাস্থ্যবিধি (ঘরের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ), গৃহপালিত পশুর লালন-পালন ও ঘরোয়া চিকিৎসাসেবা (ঘরে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসাসেবা) ইত্যাদি ঘরোয়া স্বাস্থ্যবিধির অন্তর্ভুক্ত।
রোগ বিস্তার প্রতিরোধের অর্থ হল, সংক্রমণ প্রবাহের ধারা ভঙ্গ করা। সাধারণত সংক্রমণের প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে রোগ আর ছড়াতে পারে না। দৈনন্দিন জীবনে ঘর-বাড়িতে স্বাস্থ্যবিধির কার্যকর নিয়মাবলি প্রণয়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিফিক ফোরাম অন হোম হাইজিন নামক সংস্থা হ্যাজার্ড অ্যানালাইসিস ক্রিটিকাল কন্ট্রোল পয়েন্ট (এইচএসিসিপি) ভিত্তিক একটি ঝুঁকি-ভিত্তিক পদ্ধতি বের করেছে। একে “টারগেটেড স্বাস্থ্যবিধি”ও বলা হয়। টারগেটেড স্বাস্থ্যবিধির ভিত্তিমূল হল, ঘর-বাড়ির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোগের পথ চিহ্নিতকরণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সংক্রমণের ধারা ভেঙে স্বাস্থ্যবিধি প্রবর্তন করা।
রোগ সংক্রমণের প্রধান উৎসসমূহঃ
হল, মানুষ (আক্রান্ত বা জীবাণুবাহী ), খাদ্য, পানি এবং গৃহপালিত পশু (যুক্তরাষ্ট্রে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি ঘরে পোষা প্রাণী বিদ্যমান) । যেসব স্থানে পানি জমে থাকে যেমন ডোবা, পায়খানা, নষ্ট পানির পাইপ ইত্যাদি খুব সহজেই জীবাণুর বংশ বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়। জীবাণুসমূহ পরে এইসব স্থান থেকে মিউকাল ঝিল্লি, মল, বমি ইত্যাদির মাধ্যমে খুব সহজেই ছড়িয়ে পরে। মানুষ কোন স্থানে একত্র হলে এইসব জীবাণু সরাসরি কিংবা খাদ্যের মাধ্যমে সংক্রমণের সুযোগ পায়।
ঘর-বাড়িতে জীবাণু ছড়ানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হল হাত, হাত ও খাবার যেসব জায়গা স্পর্শ করে সেসব স্থান, ধোওয়া-মোছার নেকড়া এবং পাত্রসমূহ। কাপড়ের মাধ্যমেও জীবাণু ছড়াতে পারে। টয়লেট, বেসিন ইত্যাদি যদিও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্যই তৈরি করা হয়েছে তবুও এসব থেকেও রোগ-জীবাণু ছড়ানোর আশংকা আছে। তাছাড়া অজায়গাতে বর্জ্য ফেলা, অনিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন পদ্ধতি থেকে ডায়রিয়া রোগ ছড়াতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস এবং ছত্রাকের বীজ বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
হাত ধোওয়াঃ
হাতের স্বাস্থ্যবিধি হল হাত, নখ সাবান-পানি দিয়ে অথবা পানিবিহীন হাত পরিষ্কারকের মাধ্যমে পরিষ্কার করা। প্রাত্যহিক জীবনে সকল জীবাণু প্রতিরোধের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হল হাত ধোওয়া।
যেখানে হাত ধোওয়া সম্ভব নয় সেখানে পানিবিহীন হাত পরিষ্কারক যেমন অ্যালকোহল হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করা যায়। এগুলোকে হাত ধোওয়ার বিকল্প হিসেবে নিতে হবে যেন জীবাণুর ঝুঁকি কমানো যায়। এধরনের পরিষ্কারক কার্যকর করতে এতে ৬০%v/v অ্যালকোহল থাকা উচিৎ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO)–র মতে, জরুরি অবস্থায় সাবান না থাকলে ছাই দিয়ে হাত ধোওয়া ভাল। তাছাড়া জরুরী স্থলে পরিষ্কার বালু দিয়েও হাত ধোওয়া যাবে।পল্লী অঞ্চলে ছাইয়ের ব্যবহার একেবারেই সাধারণ ব্যাপার এবং গবেষণায়ও দেখা গেছে এটি জীবাণু দূর করতে সাবানের মতই কার্যকর।
সময় নিউজ২৪.কম
Leave a Reply