শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠনঃ
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী নামক ঘাটের ওপর প্রায় ৬ মাস আগে সেতু নির্মিত হলেও সেটি কোনো কাজেই আসছে না। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকার লোকজন।জানা গেছে, প্রকল্পের সময় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তবে, জাতীয় সংসদ নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের ( দুটি উপজেলার) লোকজনের কাছে জননেতা হিসাবে পরিচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় জনস্বার্থে তার নিজ উদ্যোগে ( অর্থে) রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় এক বিঘা ৫ কাঠা জমি স্থানিয় কৃষকদের থেকে টাকা দিয়ে রাস্তার জন্য ক্রয় করতে চাইলেও উপরোক্ত জমির মালিকরা তা প্রত্যাখান করেছেন যার ফলে জমি জটিলতার কারনে রাস্তাটি নির্মাণ করা সম্ভব না হওয়ায় সেতুটি এক প্রকার রাস্তা বিহীন অবস্থায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী উপজেলার দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটে প্রায় ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ২১ লাখ ২৭৭ টাকা। কাজটি করেছেন ‘ইথেন-পিএমপিএল জয়েন ভেঞ্চার’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ছয় মাস আগে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেতুর পূর্বপাশে প্রায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের (এক বিঘা পাঁচ কাঠা) জমি জটিতলায় সংযোগ সড়কের কাজ থেমে আছে।
বিশেষ করে সেতুর পূর্বপার্শ্বের সরকারি সরু রাস্তা আছে। কিন্তু রাস্তাটি অনেকটাই বাঁকা। এছাড়া প্রশস্ত করতে রাস্তার দুইপাশে ব্যক্তি মালিকানার ৫ জনের জমির ওপর পড়বে রাস্তাটি।
তবে- সেতু নির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হলেও রাস্তা নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। কোনো বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিম জনস্বার্থে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য নিজ অর্থে এক বিঘা পাঁচ কাঠা জমি ক্রয় করার উদ্যোগ নেন, এমনকি তিনি জমির মালিকদের ইতি মধ্যেই ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে ও চেয়েছেন। কিন্তু বাজার মূল্যের চেয়ে তুলনামূলক দাম কিছুটা কম হওয়ায় জমির মালিকরা জমি দিতে রাজি হয়নি।
জমির মালিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে জরিপের সময় সেতু থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত কয়েকজন মালিকের প্রায় এক বিঘা পাঁচ কাঠা জমি পড়েছে রাস্তায়। সেখানে আমারও পাঁচ কাঠা জমি আছে। বর্তমানে জমির মূল্যর থেকে কম মূল্য দিতে চাওয়ায় তারা জমি দিতে রাজি হন নি তারা, এ কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে।এ বিষয়ে ইথেন-পিএমপিএল জয়েন ভেঞ্চারের ঠিকাদার ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল বলেন, সেতুর কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু জমি জটিলতায় এপ্রোচ সড়কের কাজ হচ্ছে না। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। তবে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
স্থানিয় উপজেলা সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই সেতুর জন্য ডেভলোপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপ্রোজালের (ডিপিপি) সময় এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। সেতুর পূর্বপাশে সরকারি যে রাস্তা আছে তার ওপর দিয়েই রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এছাড়া রাস্তা প্রশস্ত করতে হলে কিছু ব্যক্তিগত জমির ওপরও যাবে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয় ইতিমধ্যেই জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া ঠিকাদার অন্য জায়গায় কাজ করছেন। সেখানে কাজ শেষ হলেই ওই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করবেন।
Leave a Reply