- নগর উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় কাজ করছেন মেয়র সাক্কু
- একনেকে দুই হাজার তিনশ’ কোটি টাকার প্রকল্পে বদলে যাবে কুমিল্লা নগরী
- তৈরি হবে ১২ তলা বিশিষ্ঠ নগর ভবন ও তিনটি সেবক কলনী
- দৃষ্টি নন্দন স্থাপনায় মোহিত কুমিল্লাবাসী
স্টাফ রিপোর্টার।।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক)। নগর উন্নয়নে রাজস্ব বৃদ্ধিসহ দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন মেয়র সাক্কু। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছর থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সাথে বৃদ্ধি করা হয়েছে নগরিক সুবিধা। নগরীর উন্নয়ন কর্মকা-ে খুশি সাধারণ নাগরিকরা। দুই হাজার তিনশ’ কোটি টাকার প্রকল্পে বদলে যাবে নগরীর চেহরা।
হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধির নেপথ্যে:
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় প্রথম বারের মতো কুসিক চলতি বছর হোল্ডিং ট্যাক্স কিছুটা বৃদ্ধি করেছে। যা প্রতি পাঁচ বছর পরপর কর বৃদ্ধির নির্দেশনা রয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে লাকসাম পৌরসভার বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স ছিলো ৯ কোটি টাকা । বিগত বছরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বার্ষিক ট্যাক্স ছিলো প্রায় চার কোটি টাকা । যা একটি মহানগর হিসাবে খুবই কম। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ২০২০-২১ বছর থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স অংশিক বৃদ্ধি করা হয়েছে। নগরবাসীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেলে সেবা ও সেবার মান আরও বৃদ্ধি করা হবে।
১০ হাজার টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স বছরে ৩৪০ টাকা মাত্র:
কক্ষ হিসাবে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করেছে কুসিক। প্রতি কক্ষের ভাড়া ধরা হয়েছে এক হাজার মাত্র। দুই মাসের ভাড়া বাদ দিয়ে দশ মাসের ভাড়া হিসাব করা হয়েছে।নগরীর কিছুকিছু স্থানে এক চতুর্থাংশ, কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এক পঞ্চমাংশের ট্যাক্স ধরা হয়েছে। অর্থাৎ দশ হাজার টাকার ভাড়াকে কুসিক দশ হাজার পরিগণিত না করে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পরিগণিত করেছ। স্থানীয় সরকারের আইন অনুযায়ী সে টাকার ১৭% বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স হিসাবে ধার্য করেছে কুসিক। অর্থাৎ একজন নাগরিক ১০ হাজার টাকা বছরে যে কক্ষটির ভাড়া ভোগ করেন। তার থেকে ৩৪০ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স হিসাবে নগরীতে জমা দিবেন। টিন আবার টিন সেট কক্ষ প্রতি ৩০০-৫০০ টাকা হিসাব করা হয়। তবে বাণিজ্যিক ভবনের ট্যাক্স ভিন্ন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
পুনর্বিবেচনার সুযোগ:
যদি কোন নগরিক মনে করেন তার ট্যাক্স অতিরিক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রেখেছেন কুসিক মেয়র। ২০ টাকার বিনিময়ে ফি ফরমে আবেদন করলে, তার আবেদন পুনর্বিবেচনা করা হয়। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার নগরিকের ট্যাক্স পুনর্বিবেচনা করে, তা কমানো হয়েছে। বিশেষ ক্ষেত্রে আরও কমানো হয়েছে। যারা ব্যাংক লোন নিয়ে বাড়ি করেছে, তাদের ট্যাক্স আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হয়েছে।
হোল্ডিং ট্যাক্সে বিশেষ ছাড়:
একসাথে পূর্ণ ট্যাক্স পরিশোধে নির্ধারিত টাকা থেকে ১০% মওকুফের করছে কুসিক। পুরো টাকা একসাথে দিয়ে এ সুবিধা ভোগ করছেন অধিকাংশ নাগরিক। নির্ধারিত ট্যাক্স থেকে এ ছাড় পেয়ে খুশি কুমিল্লার নাগরিকরা।
হোল্ডিং ট্যাক্সে ছাড় পেয়ে খুশি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের:
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা অবদান রেখেছেন। তাদের হোল্ডিং ট্যাক্সে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে কুসিক। নির্ধারিত ট্যাক্স থেকে তারা আরও ৭% মওকুফেরর ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র সাক্কু। এরই মাঝে নগরীর অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এ সুবিধা ভোগ করেছেন। মেয়রের এ মহৎ কাজে খুশি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
মেয়র সাক্কুর যত উন্নয়ন:
কুসিক সূত্রমতে, কুমিল্লা পৌরসভা থেকে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। শুরু থেকেই ধারাবাহিক উন্নয়নে কাজ করছে কুসিক। ইতোমধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডে এলইডি লাইট স্থাপন, আরসিসি সড়ক নিমার্ণ, জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে ড্রেন নির্মাণ, সড়কের মোড়ে মোড়ে দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা, সড়কের পাশে ফুলের বাগান ও ফোয়ারা নিমার্ণ, ফুটপাত সংস্কার, নিউমার্কেট ও পৌর ভবন নির্মাণ, কান্দিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ নির্মাণ, ফৌজদারী মোড় ও জিলা স্কুল সংলগ্ন আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নামের ফলক, নগরীর প্রাণকেন্দ্র পূবালী চত্বরে ঝরনা ফোয়ারা নির্মাণ, নগর প্রায় সকল সড়ক মেরামত ও পুনঃসংস্কার, বর্জ্য পরিবহনে আধুনিক ভ্যান, ড্রাম্প ট্রাকসহ অন্যান্য সুবিধা সংযোজন করা হয়েছে।
বদলে যাবে নগরীর চেহারা:
মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, স্থানীয় সরকারের মাননীয় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম মহোদয় ও কুমিল্লা সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয়ের আন্তরিক সহযোগিতায় একনেকে দুই হাজার তিনশ’ কোটি কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলছে। আগামী এক দুই মাসের মধ্যে অনুমোদন পাশের আশা করি। এ প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে নগরীতে কোন সমস্যা থাকবে না। এছাড়াও ডিপিপি, জাইকা, এমজিএসপিসহ অন্যান্য প্রকল্পের কাজও এগিয়ে চলছে। এছাড়াও ১২ তলা বিশিষ্ট আধুনিক নগর ভবন ও তিনটি সেবক কলনী তৈরি করার পরিকল্পনা চলছে।
নতুন দিগন্তে কুসিক:
নগরীর প্রায় সকল সড়কে এলইডি বাতি স্থাপন করা হয়েছে। ২৭টি ওয়ার্ডে সড়ক বাতি নিয়ে যদি কোন অভিযোগ পরামর্শ থাকে তাহলে প্রতিদিন মাগরিব নামাজের পর থেকে এশা পর্যন্ত মোবাইল (০১৮৭২৬৯৮৯৪৯) নম্বরে জানানোর সুযোগ রয়েছে। প্রথমবারের মতো এ সুযোগ চালু করেছে কুসিক। নগরীর এমন উদ্যোগকে নতুন দিগন্ত হিসাবে দেখছেন নাগরিকরা। নাগরিকদের প্রত্যাশা, অন্যান্য বিষয়ে মোবাইল হেল্প লাইন চালু করা প্রয়োজন।
আগামী নির্বাচন নিয়ে যা বললেন মেয়র সাক্কু:
অতীতে কুমিল্লার মানুষ বারবার আমার ওপর আস্থা ও ভরসা রেখেছে। আমি ধর্ম-বর্ণ, মতের ঊর্ধ্বে মানুষের জন্য কাজ করেছি। এ নগরকে এগিয়ে নিতে যখন যার, সহযোগিতা প্রয়োজন তাদের সহযোগিতা নিয়েছি। সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছি। আশা করি, কুমিল্লাবাসী পূর্বের ন্যায় আমার প্রতি আস্থা রাখবেন।
Leave a Reply